জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের প্রস্তাব
১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫০ এএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫০ এএম

বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন একটি অন্যতম প্রধান কার্যক্রম। যুদ্ধ, দাঙ্গা বা সহিংসতায় জর্জরিত অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই মিশনের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অর্থায়ন পুরোপুরি বন্ধের প্রস্তাব ওঠায় বৈশ্বিক সহযোগিতায় এক নতুন সংকটের ইঙ্গিত মিলেছে।
এই প্রস্তাব এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৫ সালের আসন্ন অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনার খসড়ায়, যা শুরু হবে ১ অক্টোবর থেকে। হোয়াইট হাউজের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেট চাওয়ার জবাবে ‘পাসব্যাক’ নামে পরিচিত একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে এই সুপারিশ তুলে ধরে। ওএমবির যুক্তি, মালি, লেবানন ও ডিআর কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ব্যর্থতা প্রমাণ করে এ মিশনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ, তাই আর অর্থায়ন নয়। বর্তমানে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ৫৬০ কোটি ডলারের বাজেটের ২৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রই দেয়, এবং এই প্রস্তাব অনুযায়ী সে দায় থেকে তারা সম্পূর্ণ সরে আসতে চায়।
রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র—এটি সংস্থাটির ৩৭০ কোটি ডলারের নিয়মিত বাজেটের ২২ শতাংশ দেয়। এর পাশাপাশি শান্তিরক্ষা বাজেটেও সবচেয়ে বড় অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই দুই খাতেই বাজেট কমানোর প্রস্তাব এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে। ওএমবি আরও জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহায়তার বিকল্প হিসেবে ২১০ কোটি ডলারের ‘আমেরিকা ফার্স্ট অপরচুনিটি ফান্ড (A1OF)’ গঠনের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। তারা বলছে, প্রশাসন চাইলে এই তহবিল থেকেই জাতিসংঘে সীমিত সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। তবে এই বিকল্প কার্যকরভাবে বর্তমান সহায়তা কাঠামোর ঘাটতি পূরণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফাঁস হওয়া নথি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভ্যন্তরীণ বিতর্কের অংশ হওয়ায়’ তিনি কোনো মন্তব্য করতে নারাজ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জাতিসংঘের ১৫০ কোটি ডলার নিয়মিত বাজেটের এবং ১২০ কোটি ডলার শান্তিরক্ষা বাজেটের বকেয়া রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য রাষ্ট্ররা দুই বছরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদের ভোটাধিকার হারানোর ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিজেও খরচ কমানো ও দক্ষতা বৃদ্ধির পথ খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন। জাতিসংঘের ৮০ বছরের ইতিহাসে এটি এক বড় আর্থিক সংকটের সময়।
এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে শুধু জাতিসংঘ নয়, গোটা আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ব্যবস্থায় এক বড় ধাক্কা লাগবে। যে সব দেশে শান্তিরক্ষীরা জীবন বাজি রেখে সশস্ত্র সংঘাতে ঘেরা এলাকাগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন, তাদের সেই প্রচেষ্টা আজ অর্থনৈতিক অস্বীকৃতির মুখে পড়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে সহিংসতা আরও বেড়ে যেতে পারে এবং বিশ্ব শান্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হতে পারে। এখন প্রয়োজন আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের ঐক্য, কৌশলী কূটনীতি এবং মানবতার স্বার্থে সম্মিলিত পদক্ষেপ। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

রাজবাড়ীতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

হেফাজত নেতাদের মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : আসিফ নজরুল

মির্জাপুরে লৌহজং নদীর পাড় কেটে মাটিলুট ৭ লাখ টাকা জরিমানা

সউদী থেকে ফিরেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে বিমানবন্দরে মোদির জরুরি বৈঠক

পুলিশের লোগো নৌকা মুক্ত

ঢাকার ২ সিটি করপোরেশনকে একত্রিতকরণসহ যেসব সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের অনশন অব্যাহত, উপদেষ্টার অনুরোধ অগ্রাহ্য

বরিশালে পেয়াজ ও আলু উৎপাদনে লক্ষ্য অর্জন, দরপতনে কৃষকের মাথায় হাত

গোল্ডেন ভিসায় দুবাই গিয়ে অর্থপাচারকারী ৭০ ভিআইপি শনাক্ত, কর নথি তলব দুদকে

কুয়েটে অনশনরতদের কাছে শিক্ষা উপদেষ্টা, আলোচনা চলছে

বাল্টিক সাগরের তলদেশে ডেনমার্ক-জার্মানি টানেল: যোগাযোগের নতুন দিগন্ত

কাশ্মীরে পর্যটক হত্যার নিন্দা জানাই, তবে পেছনে কারা জানা প্রয়োজন: আসিফ নজরুল

আমার নেশা-পেশা সবকিছুই সিনেমা কেন্দ্রিক–শাকিব খান

হজযাত্রীদের জন্য তাপ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সৌদি আরব

হাইকোর্টে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীর আবেদন, ৫ জনের জামিন

গাজার ১১ বছর বয়সী সাংবাদিক কে এই সুমাইয়া?

কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জ- করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক খানা-খন্দে ভরা, বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ

কাশ্মীরে হামলার পর মোদিকে ট্রাম্পের ফোন কল, পাশে থাকার আশ্বাস

আনোয়ারায় সংঘর্ষের ঘটনায় কঠোর অবস্থানে পুলিশ, গ্রেফতার এড়াতে পলাতক বিএনপির নেতাকর্মীরা